ভোটের প্রস্তুতি

নির্বাচন কমিশন, প্রার্থী ও রাজনৈতিক দল কিভাবে ভোটের প্রস্তুতি গ্রহণ করেন? সব জানবো এখানে।


নির্বাচন

নির্বাচন হলো সিদ্ধান্ত গ্রহণের এমন একটি প্রক্রিয়া। নির্দিষ্ট উদ্দেশ্য সাধনের জন্য একটি দল বা ব্যক্তিকে বাছায় করে নেয়ার প্রক্রিয়া হলো নির্বাচন। এক কথায়, সর্বসম্মতিতে বা সংখ্যাগরিষ্ঠ মতামতের ভিত্তিতে কোন সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য যে পদ্ধতির আশ্রয় নেয়া হয় সেটাই নির্বাচন। যে কোন ঐক্যবদ্ধ জনগোষ্ঠী বা কমিটি থেকে শুরু করে রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারনী বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য নির্বাচনের আশ্রয় নেয়া হয়। সহজ কথায় ভোট দানের মাধ্যমে প্রতিনিধি নিয়োগের প্রক্রিয়াকে নির্বাচন বলে। সাধারণ অর্থে নির্বাচন হলো এমন একটি প্রক্রিয়া বা পদ্ধতি, যার মাধ্যমে দেশের ভোটাধিকারপ্রাপ্ত নাগরিকেরা তাদের প্রতিনিধি বাছাই করে। অন্যভাবে বলা যায়, নির্বাচন একটি সাংবিধানিক প্রক্রিয়া। যে প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সরকারের সার্বিক সহযোগিতায় ভোটাধিকার প্রাপ্ত সকল নাগরিক ভোট দিয়ে রাষ্ট্রের শাসনকাজ পরিচালনার জন্য প্রার্থী বা প্রতিনিধি বাছাই করে।

মানব সভ্যতার ইতিহাসের প্রাচীন কাল থেকেই গ্রিস ও রোমে নির্বাচন পদ্ধতির ব্যবহার হয়েছে। গোটা মধ্যযুগে রোমান সম্রাট ও পোপের মত শাসক বাছাই করতেও নির্বাচনের ব্যবহার হয়েছে। প্রাচীন ভারতে নির্বাচনের মাধ্যমে প্রজারা বাছাই করতেন রাজাদের। বাংলার মধ্যযুগের গোড়ার দিকে পাল রাজাদের মধ্যে গোপালকে বাছাই করতে এই নির্বাচন করা হয়েছিল।

আধুনিক ‘নির্বাচন’ হলো জনগণের ভোটে সরকার নির্বাচন। সপ্তদশ শতাব্দীর একেবারে শুরুর দিকে উত্তর আমেরিকা এবং ইউরোপে যখন প্রতিনিধিত্বমূলক সরকার গঠনের ধারণা এলো তখন থেকেই আধুনিক নির্বাচন ব্যবস্থার সূচনা।

রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে বাংলাদেশে সাত ধরণের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। সেগুলো হলো: • রাষ্ট্রপতি নির্বাচন • জাতীয় সংসদ নির্বাচন • সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন • জেলা পরিষদ নির্বাচন • উপজেলা পরিষদ নির্বাচন • পৌরসভা নির্বাচন • ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন

নির্বাচনি প্রতীক হলো কোন রাজনৈতিক দলকে বা ব্যক্তিকে বরাদ্দ করা একটি বিশেষ চিহ্ন বা মার্কা। নির্বাচন কমিশন থেকে প্রতিটি রাজনৈতিক দল বা ব্যক্তিকে এই প্রতীক বরাদ্দ করা হয়। এই প্রতীক ঐ দল বা ব্যক্তির পরিচিতি নির্দেশ করে। ব্যালট পেপারে উক্ত দল বা ব্যক্তির নামের পাশাপাশি এই প্রতীক চিহ্নিত থাকে।

বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের প্রতীকের তালিকায় আছে ৬৪টি প্রতীক।

প্রত্যক্ষ নির্বাচন: নাগরিকেরা যখন সরাসরি ভোট দিয়ে তাদের প্রতিনিধি নির্বাচন করে তখন তাকে প্রত্যক্ষ নির্বাচন বলা হয়। আমাদের দেশে জাতীয় সংসদের সদস্যরা প্রত্যক্ষ নির্বাচন পদ্ধতিতে নির্বাচিত হয়ে থাকেন। এছাড়া স্থানীয় সরকার যেমন ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য ও চেয়ারম্যান, উপজেলা পরিষদের সদস্য ও চেয়ারম্যান, পৌরসভা কাউন্সিলর ও মেয়র এবং সিটি কর্পোরেশনের কাউন্সিলর ও মেয়র জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত হন। পরোক্ষ নির্বাচন: এ পদ্ধতিতে নাগরিকেরা সরাসরি ভোট দিয়ে তাদের প্রতিনিধি নির্বাচন করে না। এখানে নির্বাচনটি হয় দুই ধাপে। প্রথমে নাগরিকেরা সরাসরি ভোট প্রদানের মাধ্যমে মধ্যবর্তী একটি স্তর বা প্রতিনিধি সংস্থার জন্য সদস্য নির্বাচন করে। তারপর এই প্রতিনিধিরাই ভোট দিয়ে চূড়ান্ত প্রতিনিধি নির্বাচন করেন। বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি নির্বাচন এবং জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত মহিলা আসনের সদস্য নির্বাচন এ রকম পরোক্ষ পদ্ধতিতেই হয়ে থাকে। যেমন আমাদের দেশের রাষ্ট্রপতি জনগণ বা ভোটারদের সরাসরি ভোটে নির্বাচিত হন না। সাধারণ নির্বাচনের সময় নাগরিকেরা ভোট দিয়ে জাতীয় সংসদের সদস্য নির্বাচন করেন। এই নির্বাচিত প্রতিনিধিরাই ভোট দিয়ে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন করেণ। একইভাবে জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত মহিলা আসনের সদস্যরাও জনগণের সরাসরি ভোটে নির্বাচিত হন না। জাতীয় সংসদের নির্বাচিত সদস্যরাই ওই আসনগুলোর জন্য ভোট দিতে পারেন।

ভোটদান যেমন নাগরিকের রাজনৈতিক অধিকার, তেমনি নির্বাচনে নাগরিকদের প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার অধিকারও একটি রাজনৈতিক অধিকার। বাংলাদেশের জাতীয় ও স্থানীয় পর্যায়ের নির্বাচনে যে কোন নাগরিক কয়েকটি শর্ত পূরণ করলেই নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবেন: • প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী ব্যক্তিকে অবশ্যই বাংলাদেশের নাগরিক হতে হবে। • নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত যেকোনো ব্যক্তি তার পছন্দমতো রাজনৈতিক দলের পক্ষে বা নির্দলীয় প্রার্থী হিসাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবেন। • প্রার্থীকে নির্দিষ্ট বয়সের অধিকারী হতে হবে। যেমন জাতীয় সংসদ সদস্য পদে এবং উপজেলা চেয়ারম্যান ও কমিশনার পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য কমপক্ষে ২৫ বছর বয়স হতে হবে। • অপ্রকৃতস্থ বা রাষ্ট্র কর্তৃক দেউলিয়া ঘোষিত কোনো ব্যক্তি প্রতিদ্বন্দ্বিতায় অংশগ্রহণ করতে পারবে না। • চাকুরীরত সরকারি অবস্থায় প্রতিদ্বন্দ্বিতায় অংশগ্রহণ করতে পারবে না।

ভোট গ্রহণের জন্য নির্ধারিত দিনের ৩ সপ্তাহ সময়ের পূর্বে কোন প্রকার নির্বাচনী প্রচার শুরু করতে পারবে না।

নির্বাচন কমিশন

বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন রাষ্ট্রিয় পর্যায়ে নির্বাচন পরিচালনার জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান। সংবিধানের ১১৮ ধারা অনুযায়ি নির্বাচন কমিশন পাঁচ বছরের জন্য গঠন করা হয়। বাংলাদেশের জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনের পাশাপাশি মেয়র নির্বাচন, ইউনিয়ন পর্যায়ের বিভিন্ন নির্বাচনের দায়িত্ব পালন করে প্রতিষ্ঠানটি। বাংলাদেশে ১৯৭২ সালে প্রণীত সংবিধানে নির্বাচন কমিশন গঠনের বিধান রাখা হয়। নির্বাচন কমিশন সংবিধান ও আইনের আওতায় দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে স্বাধীন।

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের সপ্তম ভাগে নির্বাচন কমিশনের গঠন-কাঠামো, ক্ষমতা ও দায়িত্ব নির্ধারণ করা আছে। নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা, নির্বাচনী এলাকা নির্ধারণ, ভোটার তালিকা তৈরি ও হালনাগাদ করা, ভোটগ্রহণ তত্ত্বাবধান, নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা এবং নির্বাচনী অভিযোগ-মোকদ্দমা মীমাংসার লক্ষ্যে নির্বাচনী ট্রাইবুনাল গঠন করা নির্বাচন কমিশনের কাজ। এছাড়া উল্লেখযোগ্য আরো কয়েকটি কাজ হল: • সকল নির্বাচন ও উপ নির্বাচন পরিচালনা করা • নির্বাচনি প্রতীক বরাদ্দ করা • নির্বাচনি এলাকার সীমানা নির্ধারণ করা • সারাদেশে ভোটকেন্দ্র স্থাপন • নির্বাচনি আচরণবিধি তৈরি • ব্যালট পেপার মুদ্রণ • ব্যালট বাক্স প্রস্তুত • নির্বাচন আচরণবিধির যথাযথ প্রয়োগ • ভোট গ্রহণ ও ফলাফল প্রকাশ • নির্বাচন বিরোধ নিষ্পত্তি

রাষ্ট্রপতি কর্তৃক মনোনীত একজন প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও সর্বচ্চো চারজন কমিশনার নিয়ে এটি গঠিত। তাঁদের কাজের মেয়াদ কর্মে যোগদানের দিন থেকে পাঁচ বছর। রাষ্ট্রপতি সংবিধানের ১১৮ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনারদের নিয়োগ দান করেন।

বর্তমান প্রধান নির্বাচন কমিশনার: জনাব কে এম নূরুল হুদা নির্বাচন কমিশনার : • জনাব মাহবুব তালুকদার • জনাব মোঃ রফিকুল ইসলাম • বেগম কবিতা খানম • ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শাহাদাত হোসেন চৌধুরী (অবঃ)

রাজনৈতিক দল

একটি রাজনৈতিক দল হচ্ছে নাগরিকদের এমন একটি দল যারা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা এবং ক্ষমতায় গিয়ে সরকার গঠন করার উদ্দেশ্যে ঐক্যবদ্ধ হয়। দলটি সমষ্টিগত কল্যাণ কিংবা তাদের সমর্থকদের চাহিদা অনুযায়ী কিছু প্রস্তাবিত নীতি ও কর্মসূচির ভিত্তিতে ঐকমত্য পোষণ করে। রাজনৈতিক দলকে কেন্দ্র করেই রাজনৈতিক কার্যাবলী পরিচালিত হয়। এক কথায়, রাজনৈতিক দল বলতে একটি সংগঠিত জনসমষ্টিকে বোঝায়, যারা দলীয় আদর্শ প্রচারের মাধ্যমে জনমত গঠনের মধ্য দিয়ে বৈধ উপায়ে ক্ষমতা দখলের চেষ্টা করে।

নির্বাচন করতে হলে প্রতিটি রাজনৈতিক দলকে নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত হতে হয়। নিবন্ধন ছাড়া নির্বাচনে অংশ নেয়া যায় না। দলের চেয়ারম্যান বা সম্পাদক বা সম পদমর্যাদার কোন ব্যক্তি নির্বাচন কমিশনে দলের নিবন্ধনের জন্য আবেদন করতে পারেন। নির্বাচন কমিশনের নির্ধারিত সময়ে নিবন্ধনের জন্য আবেদন করতে হয়। বছরের যে কোন সময়ে নিবন্ধনের জন্য আবেদন করা যায় না।

বর্তমান আইন অনুযায়ী একটি রাজনৈতিক দলের আবেদন প্রক্রিয়া এবং নিবন্ধনের জন্য নিম্নলিখিত শর্তাবলী পুরণ করতে হবে- • দলের গঠনতন্ত্র ও বিধিমালা আবেদনের সাথে যুক্ত করতে হবে। • নির্বাচনি ইশতেহার (যদি থাকে), লোগো, ও পতাকার ছবি যুক্ত করতে হবে। • কেন্দ্রিয় কমিটি বা সমমানের কমিটির প্রতিটি সদস্যের পদবীসহ নামের তালিকা প্রদান করতে হবে। • দলের নামে ব্যাংক একাউন্ট, ব্যাংকের নাম ও সর্বশেষ স্থিতি যুক্ত করতে হবে। • দলের তহবিলের উৎসের বিবরণ দিতে হবে। • বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকে নিবন্ধনের জন্য আবেদনের পূর্বে সময় পর্যন্ত যে কোন সংসদ নির্বাচনে অন্তত একটি আসনে নির্বাচিত হতে হবে অথবা সেই আসনের শতকরা পাঁচ ভাগ ভোট পাওয়ার নির্বাচন কমিশন বা ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মকর্তার প্রত্যায়নপত্র জমা দিতে হবে। • রাজনৈতিক দলের নিবন্ধনের জন্য ২২টি জেলা কমিটি থাকতে হবে। • ১০০টি উপজেলা কমিটি থাকতে হয়। • সংশ্লিষ্ট জেলা-উপজেলায় দলের অফিস থাকতে হবে। • উপজেলা পর্যায়ের কমিটিতে অন্যূন ২০০ সদস্য থাকতে হবে।

বর্তমানে নির্বাচন কমিশনে ৩৯টি রাজনৈতিক দল নিবন্ধিত আছে।

• লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি – এলডিপি • জাতীয় পার্টি - জেপি • বাংলাদেশের সাম্যবাদী দল (এম.এল) • কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ • বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি • বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ • বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল - বি.এন.পি • গণতন্ত্রী পার্টি • বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি • বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি • বিকল্পধারা বাংলাদেশ • জাতীয় পার্টি • জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদ • জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডি • জাকের পার্টি • বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ • বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি-বিজেপি • বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশন • বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন • বাংলাদেশ মুসলিম লীগ • ন্যাশনাল পিপলস্ পার্টি (এনপিপি) • জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ • গণফোরাম • গণফ্রন্ট • প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক দল (পিডিপি) • বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-বাংলাদেশ ন্যাপ • বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি • ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ • বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি • ইসলামী ঐক্যজোট • বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস • ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ • বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট • জাতীয় গণতান্ত্রিক পাটি-জাগপা • বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি • খেলাফত মজলিস • বাংলাদেশ মুসলিম লীগ-বিএমএল • বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোট (মুক্তিজোট) • বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্ট-বিএনএফ

প্রতিটি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলকে প্রতি বছর ৩১শে জুলায়ের মধ্যে আগের বছরের দলের সকল ধরনের আর্থিক লেনদেনের একটি রেজিস্টার্ড চার্টার্ড একাউন্টিং ফার্মের মাধ্যমে অডিট করিয়ে রিপোর্টের একটি কপি নির্বাচন কমিশনে জমা দিতে হবে। রাজনৈতিক দলগুলোর পরিচালনার ক্ষেত্রে দলের অভ্যন্তরে গণতন্ত্রের চর্চা, জনগণের কাছে জবাবদিহি এবং আর্থিক বিষয়ক স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার জন্য এই বিধান রাখা হয়েছে।

ইশতেহার হলো রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতিশ্রুতির তালিকা। কোন দল যদি নির্বাচিত হয়ে সরকার গঠন করতে পারে তাহলে ক্ষমতায় গিয়ে তারা কোন কোন উন্নয়নমূলক কাজ করবে তারই প্রতিশ্রুতি।

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে ৩৯টি দল। উল্লেখ্য যে, দশম সংসদ নির্বাচনে ১২টি দল অংশ নেয়। নবম সংসদে ৩৮, অষ্টম সংসদে ৫৫, সপ্তম সংসদে ৮১, ষষ্ঠ সংসদে ৪২, পঞ্চম সংসদে ৭৫, তৃতীয় সংসদে ২৮, দ্বিতীয় সংসদে ২৯ এবং প্রথম সংসদ নির্বাচনে ১৪টি দল অংশ নেয়।

একাদশতম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হতে সারাদেশে ৩০০ আসনে মোট তিন হাজার ৬২টি মনোনয়নপত্র জমা পড়েছে বলে ইসির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। এরমধ্যে আওয়ামী লীগের ২৮১টি, বিএনপির ৬৯৬টি, জাতীয় পার্টির ২৩৩টি এবং অন্যান্য রাজনৈতিক দলের ১৩৫৭টি মনোনয়নপত্র জমা পড়েছে। দলীয় মনোনয়নপত্র জমা পড়েছে মোট ২৫৬৭টি। আর স্বতন্ত্র ৪৯৮টি মনোনয়নপত্র মিলে মোট সংখ্যা তিন হাজার ৬২টি।

সর্বোচ্চ মনোনয়ন এসেছে ঢাকা ৮ আসনে। এই আসনে মনোনয়ন পেয়েছেন সর্বোচ্চ ২২ জন। মাগুরা-২ আসন থেকে সর্বনিম্ন মনোনয়ন দাখিল করেছেন চার জন।

প্রার্থী

প্রার্থী হলো কোন নির্বাচনী এলাকা হতে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবার জন্য কোন নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল কর্তৃক মনোনীত ব্যক্তি অথবা স্বতন্ত্রভাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী ব্যক্তি।

২৫ বছর পূর্ণ হয়েছে এমন যে কোন নাগরিক প্রার্থী হবার যোগ্যতা এবং অযোগ্যতা বিবেচনায় নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারবেন। বাংলাদেশের সংবিধানের ৬৬ অনুচ্ছেদে এই অধিকার দেয়া হয়েছে।

প্রার্থী হওয়ার যোগ্যতা: • কোন ভোটার এলাকায় ভোটার হিসেবে তার নাম তালিকাভুক্ত হতে হবে। • বাংলাদেশের যে কোন সুস্থ্য নাগরিক যার বয়স ২৫ বছর পূর্ণ হয়েছে। • কোন ফৌজদারী অপরাধে দোষি প্রমাণিত হয়ে দুই বছর সাজা ভোগ করার পর পাঁচ বছর অতিবাহিত হলে। • কোন নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের মনোনিত প্রার্থী বা স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে হবে। • স্বতন্ত্র প্রার্থী হলে তাকে ইতিপূর্বে কোন সংসদ নির্বাচনে বিজয়ী হতে হবে অথবা তার নির্বাচনী এলাকার এক শতাংশ ভোটারের স্বাক্ষর সম্বলিত তালিকা প্রদান করতে হবে। • প্রজাতন্ত্রের কোন লাভজনক পদে চাকুরী করার পর পদত্যাগ করলে বা অবসর নেয়ার পর পাঁচ বছর অতিক্রম করলে। প্রার্থী হওয়ার অযোগ্যতা: প্রার্থীর অযোগ্যতার অসংখ্য কারণ আছে, তবে আমরা প্রধান কারণগুলো উল্লেখ করা হলো- • বয়স ২৫ বছরের কম হলে; • কোন উপযুক্ত আদালত যদি তাকে অপ্রকৃতিস্থ বলে ঘোষণা করেন; • কোন উপযুক্ত আদালত যদি তাকে দেউলিয়া বলে ঘোষণা করেন; • কোন বিদেশী রাষ্ট্রের নাগরিকত্ব অর্জন করেন কিংবা কোন বিদেশী রাষ্ট্রের প্রতি আনুগত্য ঘোষণা বা স্বীকার করেন; • ফৌজদারি অপরাধে দোষী স্যব্যস্ত হয়ে নুন্যতম দুই বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হলে এবং তার মুক্তি লাভের পর ৫ বছর সময়কাল অতিবাহিত না হয়ে থাকলে; • কোন ব্যক্তি বাংলাদেশের নাগরিক হয়ে যদি বিদেশী নাগরিকত্ব অর্জন করে সেক্ষেত্রে তিনি বিদেশী রাষ্ট্রের নাগরিকত্ব ত্যাগ করলে কিংবা অন্য ক্ষেত্রে পুনরায় বাংলাদেশের নাগরিকত্ব গ্রহণ করলে তিনি বিদেশী রাষ্ট্রের নাগরিকত্ব অর্জন করেছেন বলে গণ্য হবেন না; • প্রজাতন্ত্রের কোন লাভজনক পদে অধিষ্ঠিত থাকলে; • ঋণ খেলাপি হলে;

প্রার্থীকে মনোনয়নপত্রের সাথে আটটি তথ্য প্রদান করতে হবে। • শিক্ষাগত যোগ্যতার তথ্যাবলী • বর্তমানে কোন ফৌজদারি মামলায় অভিযুক্ত আছেন কিনা • অতীতে তার বিরুদ্ধে কোন ফৌজদারী মামলা দায়ের হয়েছে কিনা • ব্যবসা বা পেশার বিবরণী • আয়ের উৎস সমূহ • তার নিজের এবং তার উপর নির্ভরশীলদের সম্পদের বিবরণী • অতীতে তিনি জাতীয় সংসদে সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হয়ে থাকলে যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন এবং তার কতটুকু অর্জিত হয়েছে তার বিবরণ • তিনি বা তার উপর নির্ভরশীলেরা কোন ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়েছেন কিনা, নিয়ে থাকলে তার বিবরণ

কোন রাজনৈতিক দলের সমর্থন ছাড়া রাষ্ট্রের যে কোন নাগরিক নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করলে তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী বলে বিবেচিত হবেন। একজন স্বতন্ত্র প্রার্থীর অতিরিক্ত যোগ্যতা হলো- • ইতিপূর্বে অনুষ্ঠিত কোন সংসদ নির্বাচনে অংশ নিয়ে বিজয়ী হতে হবে, অথবা • তার নির্বাচনী এলাকায় অন্তত এক শতাংশ ভোটারের স্বাক্ষর সমন্বিত তালিকা দেখাতে হবে

কোন ব্যক্তি এক সাথে তিনটি আসনে প্রার্থী হতে পারবেন।

একজন প্রার্থী নির্বাচনে ২৫ লক্ষ টাকার বেশি খরচ করতে পারবেন না। এই বিষয়ে আইনগত বাধ্যবাধকতা আছে। একজন প্রার্থী ভোটার প্রতি ১০ পর্যন্ত ব্যয় করতে পারবেন। কিন্তু কোনভাবেই তার সর্বোচ্চ নির্বাচনি ব্যয় ২৫ লক্ষ টাকার বেশি হতে পারবে না।

প্রার্থীকে অবশ্যই রিটার্নিং অফিসারের কাছে তার নির্বাচনী ব্যায় নির্বাহের প্রতিটি উৎসের বিবরণ দিতে হবে, যেমন- • নিজের আয় থেকে অর্থ সংগ্রহ করলে সেই আয়ের উৎস • আত্মীয়স্বজনের কাছ থেকে ধার করলে বা তাদের দান গ্রহণ করলে তাদের সেই আয়ের উৎস • কোন ব্যক্তির নিকট থেকে ধার বা চাঁদা গ্রহন করলে তার আয়ের উৎস • কোন প্রতিষ্ঠান বা সংস্থার কাছ থেকে চাঁদা সংগ্রহ করলে তার পরিমান • অন্য যে কোন সংস্থা থেকে সংগ্রহ করার সম্ভাব্য অর্থের পরিমান উল্লেখ করতে হবে।

মনোনয়ন পত্র জমা দেয়ার সময় থেকে শুরু করে যাচাই বাছায়ের পর শেষ পর্যন্ত যদি একজন মাত্র প্রার্থী টিকে থাকেন তাহলে ঐ প্রার্থীকে বিনা প্রতিদ্বন্দিতায় নির্বাচিত করা জয়। কোন মনোনয়নপত্র বাছাইয়ের সময় রিটার্নিং অফিসার কর্তৃক প্রদত্ত সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে কোন আপীল দায়ের করা হয়নি তা রিটার্নিং অফিসার কমিশনের নিকট থেকে লিখিতভাবে নিশ্চিত হবেন, তারপর বিনা প্রতিদ্বন্দ্বীতামূলক নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা করা হবে। এভাবে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বীতায় প্রার্থী নির্বাচিত হন। আপিল দায়ের করা হলে কমিশন কর্তৃক তা মঞ্জুর হবে না।

বাংলাদেশের একজন সংসদ সদস্য আইন অনুযায়ী নিম্নলিখিত সুযোগ সুবিধা পান- • সংসদ সদস্যদের মাসিক বেতন ৫৫,০০০ টাকা • নির্বাচনী এলাকার ভাতা প্রতিমাসে ১২,৫০০ টাকা • সম্মানী ভাতা প্রতিমাসে ৫,০০০ টাকা • শুল্ক মুক্তভাবে গাড়ি আমদানির সুবিধা • মাসিক পরিবহন ভাতা ৭০,০০০ টাকা • নির্বাচনী এলাকায় অফিস খরচের জন্য প্রতিমাসে ১৫,০০০ টাকা • প্রতিমাসে লন্ড্রি ভাতা ১,৫০০ টাকা • মাসিক ক্রোকারিজ, টয়লেট্রিজ কেনার জন্য ভাতা ৬,০০০ টাকা • দেশের অভ্যন্তরে বার্ষিক ভ্রমণ খরচ ১২০,০০০ টাকা • স্বেচ্ছাধীন তহবিল বার্ষিক পাঁচ লাখ টাকা • বাসায় টেলিফোন ভাতা বাবদ প্রতিমাসে ৭,৮০০ টাকা • সংসদ সদস্যদের জন্য সংসদ ভবন এলাকায় এমপি হোস্টেলে থাকার সুবিধা এবং • ২০১৫ -২০১৯ সাল পর্যন্ত একজন সংসদ সদস্য প্রতিবছর চার কোটি টাকা করে থোক বরাদ্দ পাবেন।

ভোট

Vote কথাটি ইংরেজি শব্দ, যা এসেছে ল্যাটিন শব্দ ‘Votum’ থেকে। এর অর্থ হলো ‘To Wish’ অর্থাৎ কারও পক্ষে ইচ্ছা বা অনিচ্ছা প্রকাশ বা স্বেচ্ছায় মত প্রকাশ। ভোট হলো ব্যক্তির নিজস্ব সিদ্ধান্ত বা মতামত জানানোর একটি গণতান্ত্রিক পদ্ধতি। কোন ব্যক্তি যখন কোন সিদ্ধান্তের পক্ষে বা বিপক্ষে মতামত প্রদান করেন সেটাই ভোট। কোন সভা কিংবা নির্বাচনে সিদ্ধান্ত গ্রহণের লক্ষ্যে ভোটের প্রয়োজন পড়ে থাকে। সাধারণত: আলোচনা, বিতর্ক কিংবা নির্বাচনী প্রচারণায় এর ভূমিকা অপরিসীম। গণতন্ত্র ও প্রজাতন্ত্র - উভয় সরকার ব্যবস্থাতেই ভোটের প্রয়োগ লক্ষ্য করা যায়।

Ballot কথাটি এসেছে ইটালিয়ান শব্দ ‘Ballotta’ থেকে, যার অর্থ হলো গোপনমত বা গুপ্তমত। তবে অর্থ যাই হোক না কেনো ব্যালট পেপার বলতে আমরা সেই কাগজকেই বুঝি যার মাধ্যমে কোন ব্যক্তি তার ভোট প্রদান করেন। আর Ballot paper-এর বাংলা প্রতিশব্দ হলো গুপ্তমতপত্রী।

ব্যালট পেপারে ভোট দেবার পর ব্যালট পেপারটি যে বাক্সে ফেলা হয়। সেটাই ব্যালট বাক্স। ২০০৮ সাল থেকে বাংলাদেশে প্রতিটি জাতীয় ও স্থানীয় নির্বাচনে স্বচ্ছ ব্যালট বাক্স ব্যবহার করা হচ্ছে।

কিভাবে সিল দেবো: ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা ভোটারকে একটি ব্যালট পেপার এবং একটি সিল প্রদান করবেন। সিল এবং ব্যালট পেপারটি নিয়ে ভোটার ব্যালট পেপার চিহ্নিত করার জন্য নির্ধারিত গোপন স্থানে যাবেন। ভোটার যে প্রার্থীকে ভোট দিতে চান সেই প্রার্থীর প্রতীকটি ব্যালট পেপারে খুঁজে বের করবেন। তারপর সাবধানে ঠিক প্রতীকের উপর বর্গাকৃতি রবার স্ট্যাম্প দিয়ে ছাপ দিবেন। ভোটারকে খেয়াল রাখতে হবে কোভাবেই যেনো সিলের কালি অন্য কোন প্রতীকের উপর না পড়ে। তাহলে তার ভোট বাতিল হয়ে যেতে পারে। কিভাবে ব্যালট পেপার ভাঁজ করবো: ব্যালট পেপার ভাঁজ করার নির্দিষ্ট নিয়ম আছে। ব্যালট পেপারে পছন্দের প্রার্থীকে সিল মেরে ভোট দেবার পর পেপারটি এমনভাবে লম্বালম্বি করে ভাঁজ করতে হবে যেনো সিলের কালি অন্য প্রতীকে লেগে না যায় এবং ভোটার কোন প্রার্থীকে ভোট দিলেন সেটাও যেনো কাগজের বাইরে থেকে দেখা না যায়।

ভোটার কর্তৃক ব্যালট পেপারে সিল দেবার পর ভোটার গোপন স্থানে ব্যালট পেপারটি এমনভাবে ভাঁজ করবেন যাতে ভোট গোপন রাখা যায়। তারপর তিনি তা সহকারী প্রিজাইডিং অফিসারের সম্মুখে রক্ষিত ব্যালট বাক্সে প্রবেশ করাবেন।

জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে রাষ্ট্রের সকল নাগরিকের ভোটের অধিকার থাকাকে সার্বজনীন ভোটাধিকার বলে। শিশু, উন্মাদ ছাড়া সকল নাগরিকই সার্বজনীন ভোটাধিকারের অধিকার পাবেন। বাংলাদেশের সংবিধান সকল নাগরিকের জন্য সার্বজনীন ভোটাধিকার নিশ্চিত করেছে। যাদের কেবল নাগরিকত্ব আছে, তারা সহায়-সম্বলহীন হলেও এমনকি ভবঘুরে থাকলেও তারা ভোটাধিকার পাবেন। আধুনিক বিশ্বের সব দেশেই রাষ্ট্র পরিচালনার জন্য নাগরিকদের পছন্দ মতো জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হয়ে থাকে। বাংলাদেশে ভোট দেওয়ার ক্ষেত্রে পুরুষ ও মহিলাদের বয়সের ক্ষেত্রে তারতম্য নেই, নূ্ন্যতম ১৮ বছর হলেও সবাই ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবেন। এখন বিশ্বের ১৯৬টি দেশে এই নীতির আওতায় ভোটদান পদ্ধতি অনুসৃত হচ্ছে।

বাংলাদেশের সংবিধানের আর্টিকেল ৩৯ এ চিন্তা ও বিবেকের স্বাধীনতার নিশ্চয়তা দান করা হয়েছে। একই আর্টিকেলে বাক ও ভাব প্রকাশের স্বাধীনতার অধিকারের কথাও বলা হয়েছে। ভোট মানুষের মতামত প্রকাশের একটি অন্যতম শক্তিশালী মাধ্যম। তাই দৃঢ়ভাবে বলা যেতে পারে বাংলাদেশের সংবিধানের মাধ্যমেই চিন্তা, বিবেক, বাক এবং ভাব প্রকাশের স্বাধীনতার নিশ্চয়তা দেয়া হয়েছে। রাষ্ট্র তার নাগরিকদের এই অধিকারগুলো দিতে বাধ্য। ভোট হলো মানুষের মত প্রকাশের একটি অন্যতম প্রধান গণতান্ত্রিক অধিকার। ভোটের মাধ্যমেই জনগণ জনপ্রতিনিধি, নেতা ও নেতৃত্ব নির্বাচিত করে থাকেন। ভোট তাই আমাদের গণতান্ত্রিক অধিকার।

ডাকযোগে পোষ্টাল ব্যালটের মাধ্যমে ভোট দেয়া যায়। পদ্ধতিকে পোষ্টাল ব্যালট বলে। পোষ্টাল ব্যালটের মাধ্যমে দূরের কোন স্থান থেকে ডাকযোগে ভোট দেয়ার পদ্ধতি। গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ, ১৯৭২ এর বিধান অনুসারে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ডাকযোগে পোষ্টাল ব্যালটের মাধ্যমে ভোটাধিকার প্রয়োগের বিধান রাখা হয়েছে। যারা পোষ্টাল ব্যালটের মাধ্যমে ভোট দিতে পারবেন, তারা হলেন- • সরকারি চাকরিজীবী যিনি চাকরিসূত্রে নিজ এলাকার বাইরে সচারচার বসবাস করেন ও কারাবন্দি। • কোন ব্যক্তি তিনি যে ভোট কেন্দ্রে ভোট দেয়ার অধিকারী সে কেন্দ্র ছাড়া অন্য কোন ভোট কেন্দ্রে নির্বাচন সংক্রান্ত কোন দায়িত্ব পালনের জন্য নিযুক্ত আছেন। • কোন বাংলাদেশী ভোটার যিনি বিদেশে বসবাস করেন।

পোস্টাল ব্যালটের মাধ্যমে ভোট দিতে হলে নির্বাচনী সময়সূচী বা তফসিল ঘোষণার দিন থেকে ১৫ দিনের মধ্যে পোস্টাল ব্যালটের মাধ্যমে ভোট দেবার জন্য সংশ্লিষ্ট অফিসারের নিকট আবেদন করতে হবে।

কোন ভোটার নিরক্ষর, অসুস্থ, শারীরিক প্রতিবন্ধী হলে এবং তিনি যদি তার ব্যালট পেপারে স্বাক্ষর প্রদান করতে অসমর্থ হয়ে থাকেন তাহলে তিনি কোন সমর্থবান ভোটারের সাহায্য গ্রহণ করতে পারবেন। তার সাহায্য নিয়ে তিনি ভোট প্রদান এবং ব্যালট পেপারে স্বাক্ষর করাতে পারবেন।